• ২০২৩ অক্টোবর ০২, সোমবার, ১৪৩০ আশ্বিন ১৬
  • সর্বশেষ আপডেট : ১:৪০ পূর্বাহ্ন
  • বেটা ভার্সন
Logo
  • ২০২৩ অক্টোবর ০২, সোমবার, ১৪৩০ আশ্বিন ১৬

ডলার রেট কমে যাওয়ায় ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স কমেছে ২০%

  • প্রকাশিত ১:৫১ অপরাহ্ন বৃহস্পতিবার, মার্চ ০২, ২০২৩
ডলার রেট কমে যাওয়ায় ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স কমেছে ২০%
সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রায় ২০.২৯ শতাংশ কমে ১.৫৬ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে। এরজন্য রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে দুর্বল ডলার রেটকে (বিনিময় হার) দায়ী করেছেন ব্যাংকাররা।

বুধবার (১ মার্চ) প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১.৯৬ বিলিয়ন ডলার।

ব্যাংকাররা বলছেন, খোলা বাজারের তুলনায় ব্যাংকিং চ্যানেলে রেট কম হওয়ায় হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন অনেক প্রবাসী। এর ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে।

এছাড়া, চলতি মার্চের শেষে রমজানের রোজা শুরু হবে। সে উপলক্ষে প্রবাসীরা রোজার আগে আগে সংসারের খরচ মেটাতে ব্যাপক পরমাণ রেমিট্যন্স পাঠাবেন, তাই এই প্রবাহটা বাড়বে মার্চ মাসেই। 

যদিও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির আগের ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির তুলনায় রেমিট্যান্স প্রায় ৪.৪৬ শতাংশ বেশি হয়েছে। গেল বছর ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স আয় হয়েছিল ১.৪৯ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে মোট রেমিট্যান্স আয় হয়েছে ১৪.০১ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৩.৪৩ বিলিয়ন ডলার। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৭৫ মিলিয়ন ডলার এবং বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৩৮ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১২৪ মিলিয়ন ডলার এবং বিদেশিখাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে মাত্র ৬ মিলিয়ন ডলার।

আলোচিত সময়ে ৭ ব্যাংক কোনো রেমিট্যান্স সংগ্রহ করতে পারেনি। এগুলো হলো- বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাকাব, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।

জুলাই ও আগস্টে রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল গড়ে ২ বিলিয়ন ডলার। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনকে বেসরকারি খাতে আমদানি-রপ্তানি লেনদেন এবং রেমিট্যান্সের জন্য ডলার বিনিময়ের হার নির্ধারণের অনুমোদন দেওয়ার পর, পরবর্তী তিন মাসে আয় নেমে আসে ১.৫ বিলিয়ন ডলারে।

যদিও সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়াতে বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্সের ডলার বিনিময় হার ১০৭ টাকা। এছাড়া, প্রতি ডলার প্রতি ২.৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে, যে সমস্ত ব্যাংকের বিদেশে এক্সেঞ্জ হাউজ রয়েছে, তাদেরকে রেমিট্যান্স বাবদ ফি না নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। 

এছাড়া সর্বশেষ গত ২২ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০,০০০ ডলার পর্যন্ত রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রেরকদের কোনো ঘোষণা দিতে হবে না। যদিও ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রান্সেকশন ২০১৮-এর নির্দেশনা অনুসারে, ১০,০০০ বা তার সমমূল্য অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে কোনো ঘোষণার প্রয়োজন নেই বলে উল্লেখ রয়েছে।

কয়েকটি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, রেমিট্যান্স কমার অন্যতম কারণ হলো খোলা বাজারের তুলনায় বিনিময় হার কম হওয়া। বর্তমানে খোলাবাজারে ডলার রেট ১১২ থেকে ১১৪ টাকা। অথচ ব্যাংকিং চ্যানেলে রেট হলো ১০৭ টাকা, যার কারণে হুন্ডিতে রেমিট্যান্সে আসছে বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, "আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা বলে, রোজার এক মাস আগে রেমিট্যান্স কমে যায়। কারণ প্রবাসীরা রোজায় পরিবারের খরচ মেটাতে রোজার আগের সপ্তাহে বেশি রেমিট্যান্স পাঠান। আশা করছি, আগামী মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে।"

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে প্রায় ১১ লাখ ৩৫ হাজার জন নতুন করে বিদেশে গিয়েছেন। যদিও ২০২১ সালে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৬ লাখ। 


সর্বশেষ