কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে সার একটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য। সুলভ মূল্যে কৃষকের কাছে সার পৌঁছাতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। তবুও সুফল মিলছে না। আমদানিকারক, পরিবহন ঠিকাদার ও ডিলারদের অসাধু সিন্ডিকেট, গুদামের সার আত্মসাৎ ইত্যাদি কারণে কৃষকরা সরকার নির্ধারিত দামের অতিরিক্ত খরচে সার ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষকরা।
তবে সার কেনার বিষয়ে এবার সুখবরের কথা জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জিল্লুর রহমান চৌধুরী।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমায় আগের চেয়ে বেশ কম মূল্যে সার কেনা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার(১৫ জুন) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে শেষে তিনি বলেন, “মোটের ওপর বলতে গেলে সব ক্ষেত্রেই দাম কমেছে, আমরা সাশ্রয়ী মূল্যে পেয়েছি। রাষ্ট্রীয় চুক্তি থাকার কারণে আরও সুবিধা পেয়েছি।
“প্রতি টন ১৩০০ ডলার হয়ে গিয়েছিল। সেটা এখন ৮০০ থেকে ৮৫০ ডলারে পাওয়া গেছে। চুক্তির কারণে কমে পাওয়া গেছে।”
এদিন বৈঠকে কানাডা, কাতার, মরক্কো ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ইউরিয়া, ডিএপি ও টিএসপি সারের একাধিক লট কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) প্রস্তাবে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য ইউরিয়া সার কিনতে কাতারের সঙ্গে জিটুজি চুক্তি নবায়ন করার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এর ফলে কাতারের মুনতাজাত কোম্পানি থেকে বিভিন্ন লটে ৬ লাখ ৩০ হাজার টন সার আসবে।
ক্রয় কমিটির বৈঠকে বিসিআইসির আরেক প্রস্তাবে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার ১৭৯ কোটি ২১ লাখ ১১ হাজার ২০০ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। তাতে প্রতিকেজি ইউরিয়া সারের দাম দাঁড়াচ্ছে ৫৯ টাকা ৭৩ পয়সা।
অতিরিক্ত সচিব জিল্লুর বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) সার কেনার পৃথক তিনটি প্রস্তাব বৈঠকে উত্থাপন করে। তিনটি প্রস্তাবেই সারের দাম আগের তুলনায় কমেছে।
এছাড়া বৈঠকে কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশনের কাছ থেকে চতুর্থ লটে ২৪২ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ৩০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতিকেজি দাম পড়েছে ৮০ টাকা। ডলারের হিসাবে প্রতিটন ডিএপির দাম পড়েছে ৮৭৮ দশমিক ৭৫ ডলার।
একই সঙ্গে মরক্কোর ওসিপি থেকে ষষ্ঠ লটে প্রতিকেজি ১০৫ টাকা দরে ৪২০ কোটি ৪৪ লাখ টাকায় ৪০ হাজার টন ডিএপি এবং একই কোম্পানির কাছ থেকে সপ্তম লটে প্রতিকেজি ৮৪ টাকা দরে ২৫২ কোটি ৪০ লাখ ২০ হাজার টাকায় ৩০ হাজার টন টিএসপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়।
মতামত দিন